আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, কেমন আছো তোমারা? আজকের আর্টিকেলে ই-কমার্স ও ইন্টারনেট ওতপ্রোতভাবে জড়িত- উক্তিটির ব্যাখ্যা ক্রা হবে। কথা না বাড়িয়ে তাহলে চলুন শুরু করি।
ই-কমার্স ও ইন্টারনেট ওতপ্রোতভাবে জড়িত
ইন্টারনেট আমাদের জীবনকে গতিশীল করেছে। এখন মানুষ তার মোট সময়ের অধিকাংশ সময়েই ইন্টারনেটের সাথে সম্পৃক্ত থাকে। সেই দিন চলে গেছে যখন পত্রিকায় একটি বিজ্ঞাপন দেওয়ার জন্য বিভিন্ন মিডিয়া তথা পত্রিকার অফিসে ঘুরাঘুরি করতে হতো। ইন্টারনেটের কল্যাণে মানুষের জীবনযাত্রায় এসেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। এখন যে-কেউ ইন্টারনেটের মাধ্যমে নিজেই তার পণ্যের বিজ্ঞাপন দিতে পারছে।
মানুষ ঘরে বসে এক ক্লিকেই সকল সমস্যার সমাধান পেয়ে যাচ্ছে। চাল-ডাল-তেল যে-কোনো কিছু ক্রয় করতে এখন আর দোকানে বা শপিংমলে যেতে হয় না। ইচ্ছে হলে অনলাইনে প্রবেশ করে একটি ক্লিক করে অল্প সময়ের মধ্যেই পছন্দের পণ্যটি কিনে ফেলা যায়।
ইন্টারনেটের ব্যাপক প্রসার ও প্রভাবের কারণে গড়ে উঠেছে ই-কমার্সের বিশাল সাম্রাজ্য। ভাগ্যের ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটেছে নতুন- পুরাতন প্রায় সকল ব্যবসায়ীর।
ইন্টারনেটভিত্তিক ব্যবসায়ের অপর নাম হলো ই-কমার্স। নিচে ই-কমার্সে ইন্টারনেটের গুরুত্ব সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো-
১। স্টক ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম: ই-কমার্স বা ই-বিজনেসে কী কী পণ্য রয়েছে, কী কী পণ্য ক্রেতাদেরকে এখনই পৌঁছে দেওয়া সম্ভব তা সবার নজরে নিয়ে আসা ও পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেওয়া শুধু ইন্টারনেটের মাধ্যমেই সম্ভব। এর মাধ্যমে নতুন নতুন কী পণ্য আসছে এবং স্টকে কী কী পণ্য আছে তার নিয়মিত আপডেট পাচ্ছেন ক্রেতারা।
২। পণ্য ট্র্যাকিং সুবিধা: ইন্টারনেট এমন একটি পদ্ধতি, যার মাধ্যমে যে-কোনো ক্রেতা সহজেই জানতে পারে তার কাঙ্ক্ষিত পণ্যটি এই মুহূর্তে কোথায় আছে। অনলাইন ক্রেতারা তাদের পণ্যটি কীভাবে পেতে পারে তা-ও ইন্টারনেটের মাধ্যমে জানতে পারে।
৩। সবার কাছে পণ্য পৌঁছানো: বিশ্বের যে প্রান্তেই ক্রেতারা অবস্থান করুক না কেন, ইন্টারনেট প্রক্রিয়ায় সহজেই ক্রেতারা তার প্রত্যাশিত পণ্যটি পেতে পারে। ইন্টারনেটে একটি পণ্যের বিজ্ঞাপন দেয়ার সাথে সাথে সহজেই সম্ভাব্য ক্রেতারা পণ্যটি সম্পর্কে সব তথ্য জানতে পারছে।
৪। পণ্য বা সেবার তুলনা: ইন্টারনেটের মাধ্যমে একই ধরনের পণ্যের সমারোহ থেকে ক্রেতারা সহজেই তাদের পছন্দের পণ্য বা সেবাটি বেছে নিতে পারে। কয়েকটি সাইট ঘুরে একজন ক্রেতা পণ্যের মূল্য যাচাই করে তার পণ্যের অর্ডার গ্রহণ করতে পারে।
৫। নতুন ইন্টারনেটভিত্তিক প্রযুক্তির প্রভাব: ইন্টারনেটে প্রতিনিয়ত সংযুক্ত হচ্ছে নতুন নতুন প্রযুক্তি। তাই ইন্টারনেট ব্যবহারেও পরিবর্তন এসেছে। আর এই ইন্টারনেট ব্যবহারের পরিবর্তন প্রভাব ফেলেছে ই-কমার্সের ওপর। ইন্টারনেট ব্যবহারের যত পরিবর্তন তার সবকিছুই বিশ্বব্যাপী ক্রেতা-বিক্রেতাদের সুবিধার জন্যই।
৬। অনলাইন ব্যাংকিং এবং পেমেন্ট: ই-কমার্সের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো অনলাইন ব্যাংকিং ও পেমেন্ট সিস্টেম। পণ্যের কেনা-বেচার সাথে সাথে এর পেমেন্টও অনলাইনে সম্পন্ন হয়ে থাকে। অনলাইন ব্যাংকিং সিস্টেম ই-কমার্সে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনে দিয়েছে। অনলাইন ব্যাংকিং সিস্টেম আমাদের লেনদেন কার্যক্রম অত্যন্ত সহজ করে দিয়েছে।
৭। ক্রেতাদের ফিডব্যাক ও সমালোচনা: ই-কমার্স-এর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ব্যবসায়ীরা খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ক্রেতাদের তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া জানতে পারে। এ ছাড়া ক্রেতারা বিভিন্ন বিষয়ে যে-সকল সমালোচনা করছেন সে’ সম্পর্কে অবগত হতে পারে। ক্রেতারা ব্যবসায় সাইটটিতে কী পরিমাণ সময় দিচ্ছে ক্রেতাদের মতামত ইত্যাদি সম্পর্কেও জানার সুযোগ রয়েছে।
৮। ক্রেতাদের প্রভাবিত করা: ইন্টারনেটের কারণে যে-কেউ তার ই-কমার্স সাইটটি সহজেই প্রমোট করতে পারে। এতে করে ক্রেতাদের প্রভাবিত হবার সম্ভাবনা থাকে। যার বিজনেস সাইট যত প্রমোট করা হবে তার বিজনেস ততই পরিচিতি লাভ করবে। তাই ই-কমার্সকে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি বা ইমেজ বৃদ্ধিতে ইন্টারনেট কার্যকর ভূমিকা রাখে।
আরও দেখুন: বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নৌপথের সমস্যাসমূহ বর্ণনা কর
আশাকরি “ই-কমার্স ও ইন্টারনেট ওতপ্রোতভাবে জড়িত” আর্টিকেল টি আপনাদের ভালো লেগেছে। ভালো থাকবেন সবাই, ধন্যবাদ।