পণ্য সংগ্রহের উৎস চিহ্নিত করার পদ্ধতিগুলো বর্ণনা কর

পণ্য সংগ্রহের উৎস চিহ্নিত করার পদ্ধতি: একটি সফল ই-কমার্স ব্যবসায় প্রতিষ্ঠা করার জন্য এক প্রতিষ্ঠানকে পণ্যগুলোর উৎস চিহ্নিত করার একটি কার্যকর উপায় খুঁজে বের করা প্রয়োজন। কিন্তু এটি করা থেকে বলা সহজ। পল সংগ্রহ করার আগে, প্রতিষ্ঠানকে অবশ্যই একটি পণ্য সোর্সিং পদ্ধতি বেছে নিতে হবে, যারা প্রতিষ্ঠানের জন্য কাজ করবে। বিঘ্নি পণ্য সোর্সিং প্রতিষ্ঠানকে মূল্যায়ন করতে হবে এবং সবশেষে ব্যবসায় কাজ পরিচালনা করার জন্য একজন সরবরাহকারী নির্বাচন করতে হবে।

ই-কমার্স সরবরাহকারীদের খুঁজে পাওয়ার সর্বোত্তম উপায় হলো অনলাইন অনুসন্ধান দিয়ে শুরু করা। পাইকারি ডিরেক্টরি ব্রাউজ করতে হবে, অনলাইন মার্কেটপ্লেস চেক করতে হবে, প্রয়োজনে স্বতন্ত্র ছোট ব্যবসায়ের মালিক এবং কারিগরদের কাছে যেতে হবে। প্রতিষ্ঠানটি যদি একটি নির্দিষ্ট ব্র্যান্ড বহন করতে চায়, তাহলে সরাসরি পাইকারি ডিল করার জন্য তাদের সাথে কথা বলতে হবে।

পণ্য সংগ্রহের উৎস চিহ্নিত করার পদ্ধতি

১। পণ্য ধারণা গবেষণা: ই-কমার্স-এর ক্ষেত্রে পণ্য সংগ্রহের উৎস চিহ্নিত করার পদ্ধতিগুলোর মধ্যে সর্বপ্রথম পণ্যসম্পর্কিত্ব ধারণা গবেষণা ও উন্নত করতে হবে। একটি প্রতিষ্ঠান কী পণ্য নিয়ে ব্যবসায় করতে চায়, সেই পণ্যের বাজার আকৃতি ঐ পরিমাণ হবে, সে পণ্যের টার্গেট কাস্টমার কারা হবে, কোনো প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠান আছে কিনা এসব বিষয়ে পরিপূর্ণ গবেষণ করতে হবে।

২। সরবরাহকারী/বিক্রেতা বিশ্লেষণ: কী জাতীয় পণ্য বিক্রয় করা হবে এবং সেই পণ্যের সরবরাহকারী অথবা বিক্রেতা কারা সে বিষয়ে পরিপূর্ণ বিশ্লেষণ করতে হবে। সরাসরি উৎপাদকের কাছ থেকে কিনে বিক্রি করা হবে নাকি পাইকারদের কাছ থেরে সংগ্রহ করা হবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

৩। অনলাইন গবেষণা: পণ্য সোর্সিং করার জন্য অনলাইন গবেষণা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অনলাইনে অনেক বিশ্ব বিখ্যাত সরবরাহকারীর অস্তিত্ব আছে। সেগুলো সম্পর্কে পরিপূর্ণ জ্ঞান অর্জন করতে হবে। অনলাইনে বিখ্যাত পাইকারি সরবরাহকার হচ্ছে : eBay, Costco, SaleHoo, Worldwide Brands, Alibaba, DHgate, Inventory Source, Global Sources Bwanaz, Michaels প্রভৃতি।

৪। পাইকারদের সাথে কাজ করা: যদি বিখ্যাত পাইকারদের সাথে ভালো সম্পর্ক উন্নয়ন করা যায় তাহলে একটি প্রতিষ্ঠানের জন ভালো বিক্রির সুযোগ আছে। পাইকারদের কাছ থেকে পণ্য কিনে বিক্রি করলে পণ্য উৎপাদন খরচের প্রয়োজন হয় না।

৫। উৎপাদকের কাছ থেকে পণ্য সংগ্রহ: পণ্য সংগ্রহ করার একটি সর্বোৎকৃষ্ট মাধ্যম হচ্ছে উৎপাদকের কাছ থেকে সরাসরি পণ্য সংগ্রহ করা। এক্ষেত্রে মধ্যস্থব্যবসায়ী না থাকার কারণে পণ্য কেনার খরচ কম পড়ে এবং বেশি মুনাফা অর্জন করার সুযোগ সৃষ্টি হয়।

৬। নমুনা সংগ্রহ: ই-কমার্স-এর ক্ষেত্রে পণ্য কেনার আগে সেই পণ্যের নমুনা সংগ্রহ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নমুনা দেখে যদি একটি প্রতিষ্ঠান সন্তুষ্ট হয় সেক্ষেত্রে পণ্য কেনার ফরমায়েশ দেওয়া যেতে পারে।

৭। সরবরাহকারী মূল্যায়ন: যেহেতু ই-কমার্স এর ক্ষেত্রে একের বেশি সরবরাহকারী থাকে তাই সরবরাহকারীদেরকে তাদের দক্ষতা, যোগ্যতা, সময়ানুবর্তিতা প্রভৃতি বিষয়ে মূল্যায়ন করতে হবে।

৮। বিকল্প সরবরাহকারী রাখা: ই-কমার্স এর ক্ষেত্রে পণ্য সংগ্রহ করার জন্য অবশ্যই একাধিক সরবরাহকারীক বিকল্প হিসেবে রাখা উচিত। একজন সরবরাহকারী যদি সঠিক সময়ে সঠিক পণ্য পাঠাতে ব্যর্থ হয়, সেক্ষেত্রে তাৎক্ষণিকভাবে অন সরবরাহকারীদের কাছ থেকে যেন পণ্য সংগ্রহ করা যেতে পারে।

৯। পণ্যের মূল্য বিবেচনা: পণ্য সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে পণ্যের মূল্যকে খুব গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করতে হবে। কেননা প্রবাদ আছে যদি ক্রয় করে জেতা যায়, তাহলে বিক্রয় করে বেশি মুনাফা অর্জন করা যাবে।

১০। গুণগতমান নিয়ন্ত্রণ: ই-কমার্স এর ক্ষেত্রে পণ্যের উৎস সংগ্রহ করার জন্য অবশ্যই গুণগতমানের দিকটা খুব ভালো করে দেখতে হবে। কেননা মানসম্পন্ন পণ্য সরবরাহ করার মাধ্যমেই ক্রেতাদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে দীর্ঘদিন ব্যবসায় করা সম্ভব হয়।

পরিশেষে বলা যায় যে, কার্যকরভাবে পণ্য সংগ্রহের উৎস চিহ্নিত করার জন্য উত্তমরূপে পরিকল্পনা এবং কার্য পরিচালনার মাধ্যনে সামগ্রিকভাবে প্রতিষ্ঠানের লাভজনকতা এবং সফলতা অর্জন করা সম্ভব।


আরও দেখুন: ই-কমার্স ও ইন্টারনেট ওতপ্রোতভাবে জড়িত- উক্তিটির ব্যাখ্যা কর

আশাকরি “পণ্য সংগ্রহের উৎস চিহ্নিত করার পদ্ধতিগুলো বর্ণনা কর।” আর্টিকেল টি আপনাদের ভালো লেগেছে। ভালো থাকবেন সবাই, ধন্যবাদ।

Leave a Comment