হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বসমূহ আলোচনা কর

হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বসমূহ সম্পর্কে জানতে চাচ্ছেন? আজকের আর্টিকেল টি আপনার জন্য। আজকের আর্টিকেলে হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বসমূহ সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। কথা না বাড়িয়ে তাহলে চলুন শুরু করি।

রিসোর্স ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বসমূহ 

১। মানব সম্পদ পরিকল্পনা (Human Resource Planning): হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্টের দায়িত্ব হলো প্রতিষ্ঠানের কাজের প্রকৃতি ও ধরন অনুযায়ী কার্য বিভক্তি করে যোগ্যতা অনুযায়ী কর্মীদের মধ্যে তা বণ্টন করে দেওয়া। সময়মতো সঠিক ব্যক্তিকে সঠিক দায়িত্বে নিয়োজিত করার জন্য বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে সে অনুযায়ী বিভিন্ন মেয়াদি। পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হয়।

২। সংগঠন ও পদের নকশা প্রণয়ন (Design of organization & job): প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য সংগঠন গুরুত্বপূর্ণ। তাই কার্যকর সংগঠন কাঠামো নির্ধারণ, কার্যভিত্তিক পদ সৃষ্টি ও বিন্যাস, পারস্পরিক সম্পর্ক নির্ধারণ, দায়িত্ব ও কর্তব্য প্রদর্শন করা হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত। এজন্য পদ অনুযায়ী হিউম্যান রিসোর্সের চাহিদা নির্ধারণ ও উৎস নির্বাচন করে পদভিত্তিক কর্মী নিয়োগ করতে হয়।

৩। কার্য বর্ণনা (Job description): সংগঠনের জন্য প্রণীত নকশায় পদভিত্তিক বণ্টনকৃত কার্যের বর্ণনা হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত। এতে বিভিন্ন পদের বিপরীতে কার্যের সীমানা নির্ধারণ করা হয় এবং কাজের সামগ্রিক বর্ণনা সহজতর হয়।

৪। নির্বাচন ও স্টাফিং (Selections & staffing): প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজনে প্রয়োজনীয় দক্ষ ও অভিজ্ঞ কর্মী খুঁজে বের করা হয় এবং তাদের কাজের জন্য নির্বাচন করে উপযুক্ত ব্যক্তিকে সঠিক স্থানে পদায়ন করা হয়। এ পর্যায়ে কর্তৃপক্ষ কর্মীর প্রয়োজন শনাক্তকরণ, কর্মী সংগ্রহের উৎস নির্বাচন, পদোন্নতি, বদলি ইত্যাদি কার্য সম্পাদন করেন।

৫। প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন (Training & development): প্রশিক্ষণ ও উন্নয়নের মাধ্যমে কর্মীকে কাজের জন্য উপযুক্ত করে গড়ে তোলা যায়। কর্মীকে তার কার্য পরিবেশ, পারিপার্শ্বিক অবস্থা ও কাজ সম্পর্কে হাতেকলমে শিক্ষা দেয়াকে প্রশিক্ষণ বলে। অন্যদিকে, কর্মরত কর্মীকে অধিক দক্ষ করে গড়ে তোলার কাজকে উন্নয়ন বলে।

৬। সাংগঠনিক উন্নয়ন (Organizational development): প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মীদের সন্তুষ্টির জন্য সঠিকভাবে কার্য মূল্যায়ন ও পদ মূল্যায়ন করে সংগঠনের সকল স্তরের কর্মকর্তা ও কর্মীর মধ্যে আন্তঃব্যক্তিক এবং আন্তঃদলীয় সম্পর্ক উন্নয়নের ব্যবস্থা করা হয়।

৭। মজুরি ও বেতন (Wages & salaries): মানুষ তার অভাব পূরণের জন্য অর্থের বিনিময়ে শ্রম বিক্রি করে। শ্রমিকদের দক্ষতা ও যোগ্যতা অনুযায়ী মজুরি ও বেতন কাঠামো নির্ধারণ করতে হয়। হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট কর্মীদের জন্য বিভিন্ন ধরনের সুবিধাসহ স্থায়ী মজুরি ও বেতনের ব্যবস্থা করে থাকে।

৮। কার্য পরিবেশ (Working environment): প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানের জন্য কার্য পরিবেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। প্রতিষ্ঠানের কার্য সময়, কাজের ভৌত পরিবেশ, নিরাপত্তা ইত্যাদি বিষয়সমূহ উন্নত ও সম্প্রসারিত হলে কর্মীকে সহজে কাজের প্রতি আকর্ষিত করা যায়। তাই এগুলো হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বভুক্ত।

৯। শ্রমিক ব্যবস্থাপনা সম্পর্ক (Labour management relations): শিল্পপ্রতিষ্ঠানে শান্তি, শৃঙ্খলা, সেবা ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি সর্বোপরি প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন সুন্দর শ্রম ব্যবস্থাপনার ওপর নির্ভরশীল। সুষ্ঠু শ্রম ব্যবস্থাপনা সম্পর্ক সৃষ্টির কাজটি হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্টের দায়িত্বভুক্ত বিষয়।

১০। বিনোদন সুবিধা (Entertainment facilities): বিনোদন ব্যবস্থার মাধ্যমে শ্রমিক-কর্মীকে সতেজ ও উদ্যমী রাখা যায়। তাই কর্মীদের জন্য বিভিন্ন ধরনের বিনোদনমূলক ব্যবস্থা যেমন- খেলাধুলা, চিত্তবিনোদন, বনভোজন, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ইত্যাদির ব্যবস্থা করা মানব সম্পদ উন্নয়ন বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব।

১১। ব্যক্তিক গবেষণা ও তথ্য ব্যবস্থাপনা (Personal research & Information system): প্রযুক্তির উন্নয়নে আজ পৃথিবী পরিবর্তিত হচ্ছে অহরহ। তাই পরিবর্তিত অবস্থার সাথে তাল মিলিয়ে চলতে তথা প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে টিকে থেকে নিজেদের উন্নয়নের জন্য ব্যক্তিক গবেষণা ও তথ্য ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

কর্মীর প্রত্যাশা এবং আচরণ অনুধাবন করে তাদের মাধ্যমে প্রত্যাশা-মাফিক কাজ আদায় করতে মানব সম্পদ উন্নয়নে গবেষণা ও তথ্য ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা অত্যধিক।

আশাকরি আজকের আর্টিকেল টি ভালো লেগেছে। আমাদের সাথেই থাকুন, ধন্যবাদ।


আরও দেখুন-

Leave a Comment