যন্ত্রণার প্রহরটা বাড়তে দিলো না দক্ষিণ আফ্রিকা। মিরপুরে বছরে প্রথমবার টেস্ট খেলতে নেমে বাংলাদেশ রীতিমত বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। টেস্ট ক্রিকেটের জন্য উপযুক্ত ব্যাটিং দেখা গেল না কারো কাছ থেকেই। পুরো দলের বিপর্যয়ের মধ্যে মাহমুদুল হাসান জয়ের ৩০ রানের ইনিংসটাই যেন বিশেষ কিছু। দুই সেশনই টিকতে পেরেছে বাংলাদেশ। ওভারের হিসেবে ৫০ ওভারও পার হয়নি। তাতে বাংলাদেশের রান হলো ১০৬।
দলীয় শতরানও পার হয়েছে মূলত তাইজুল ইসলাম আর নাইম হাসানের কল্যাণে। কিন্তু তার আগে বাংলাদেশের খেলাটা দর্শকদের জন্য ছিল যন্ত্রণাদায়ক। চতুর্থ ইনিংসে প্রতিপক্ষে চেপে ধরা যাবে মন্থর উইকেটে। এমন ভাবনা থেকেই কি না টসে জিতে আগে সফরকারীদের বোলিং করতে পাঠিয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।
কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত নিয়ে আক্ষেপ করতে ৭ ওভারও সময় লাগেনি। সাজঘরে একে একে ফিরলেন সাদমান ইসলাম, মুমিনুল হক আর নাজমুল হোসেন শান্ত। অফস্ট্যাম্পের অনেক বাইরের বল ড্রাইভ করতে গিয়ে ফিরলেন সাদমান। মুমিনুল পরাস্ত হয়েছেন বাড়তি সুইংয়ের কারণে। আর শান্ত ঠিক কী করতে চেয়েছিলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে তার নিজেরও।
এই তিনটি উইকেট নিয়েছেন উইয়ান মুল্ডার। এরপর ব্যাটন পাস করেছেন কাগিসো রাবাদার কাছে। তার শিকার পরবর্তী দুজন। মুশফিকুর রহিম ক্যারিয়ারে বহুবার ইনসুইং বলে ব্যাট-প্যাডের গ্যাপে উইকেট হারিয়েছেন। রাবাদার বলেও ঘটল সেই একই ঘটনা। লিটন কুমার দাসের ক্ষেত্রে অবশ্য স্লিপে থাকা ফিল্ডার ট্রিস্টান স্টাবসের কৃতিত্বই বেশি।
মিডল অর্ডার পর্যন্ত বাংলাদেশের হয়ে ডাবল ডিজিটে পৌঁছাতে পেরেছিলেন জয় এবং মুশফিক। বল সংখ্যা এবং পার্টনারশিপের দিক থেকে তারাই ছিলেন বাংলাদেশের সেরা। জয়কে নিয়ে মুশফিক খেলেছেন ৮ ওভার। দলের স্কোরবোর্ডে সেই জুটির থেকে এসেছে ১৯ রান। মেহেদি হাসান মিরাজ করেছেন ১৩ রান। কিন্তু কেশব মহারাজের আর্ম বলটায় এলবিডব্লিউ হয়েছেন।
লাঞ্চের পর প্রথম আঘাতটা জয়ের ওপর আসে। ৯৭ বলে ৩০ রানের টেস্ট ইনিংসটি শেষ করেন ডেইন পিটের বলে। আগের বলে চার মারার পর তিনি বোল্ড হন। দলের পুরো বিপর্যয়ের মধ্যে এই রানটিকে হয়তো আলাদা করে সম্মান জানানো উচিত ছিল। খানিক পরেই অভিষিক্ত জাকের আলী অনিককে বোকা বানান কেশব মহারাজ। লোভে পড়ে এগিয়ে এসে খেলতে চেয়েছিলেন, কিন্তু স্ট্যাম্পড হয়ে যান।
বাংলাদেশের স্কোরটা ১০০ পার করে দিয়েছেন নাইম এবং তাইজুল। দুজনের ২৬ রানের জুটি বাংলাদেশ ইনিংসে ছিল সর্বোচ্চ! স্লিপে ক্যাচ দিয়ে নাইম হয়েছেন রাবাদার তৃতীয় শিকার। টাইগারদের ইনিংসের শেষটা করেছেন কেশব মহারাজ। দুর্দান্ত এক ডেলিভারিতে তাইজুল হয়েছেন বোল্ড। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ৩টি করে উইকেট নিয়েছেন মুল্ডার, রাবাদা এবং মহারাজ। অন্য উইকেটটি পিটের দখলে।
